বৈদিক সংস্কৃতিতে "কোটি" শব্দের অর্থ হচ্ছে প্রকার।
অর্থাৎ বিশ্বের মধ্যে দেব হচ্ছে তেত্রিশ প্রকার, তেত্রিশ কোটি নয়। তেত্রিশ কোটি দেবতার কল্পনা মিথ্যা এবং ভ্রামক।
যস্য ত্রয়ত্রিংশদা দেবা অঙ্গ গাত্রা বিভেজিরে।
তান বৈ ত্রয়স্ত্রিংশদা দেবানো ব্রহ্মবিদো বিদুঃ।।
(অথর্ববেদ ২০।৭।২৭)
অর্থাৎ ব্রহ্মবিদ লোক জানে যে তেত্রিশ প্রকার দেব
সংসারের ধারন এবং পালন করে।
অতএব তেত্রিশ প্রকার দেবতা কে কে?
" অষ্টৌ বসব একাদশ রুদ্রা দ্বাদশদিত্যাস্ত একত্রিংশদিন্দ্রশ্চৈব প্রজাপতিশ্চ ত্রয়ত্রিংশা চিতি"
(বৃহঃ উপঃ ৩।৯।২)
অর্থাৎ অষ্ট বসু, একাদশ রুদ্র, দ্বাদশ আদিত্য এই কয় জন মিলিয়া
একত্রিশ এবং ইন্দ্র ও প্রজাপতি মিলিয়া তেত্রিশ দেব।
★ অষ্ট বসুঃ
অগ্নিশ্চ পৃথিবীশ্চ বায়শ্চান্তিরিক্ষং চাদিত্যশ্চ
দ্যৌশ্চ চন্দ্রমাশ্চ নক্ষত্রাণি চৈত্রে বসব ;( বৃহঃ উপঃ ৩।৯।৩। )
অর্থাৎ অগ্নি, পৃথিবী, বায়ু, অন্তরিক্ষ, আদিত্য, দ্যুলোক,
চন্দ্র, নক্ষত্রপুন্জ ইহারা অষ্ট বসু। কারন নিখিল পদার্থ ইহাদের
মধ্যে নিহিত আছে সেই জন্য এদের নাম বসু।
.
★ একাদশ রুদ্রঃ
দশমে পুরুষো প্রাণা আত্মৈকাদশন্তে ; (বৃহঃ
উপঃ ৩।৯।৪)
অর্থাৎ পঞ্চ প্রাণ এবং পঞ্চ উপপ্রাণ এই দশ এবং জীবাত্মা
মিলে একাদশ রুদ্র। এই এগারো দেহান্তকালে রোদন করায়
বলিয়া রুদ্র বলা হয়। এগুলো হচ্ছে -
পঞ্চ প্রাণঃ প্রাণ, উদান,সমান, ব্যান, অপান।
উপ প্রাণঃ নাগ, কুর্ম, কৃকল, দেব, ধনন্জয়।
এবং জীবাত্মা।
.
★ দ্বাদশ আদিত্যঃ দ্বাদশ বৈ মাসা ; (বৃহঃ উপঃ ৩।৯।৬)
সম্বৎসরে বার মাস আছে ইহারাই আদিত্য। কারন ইহারা এইসমস্তকে আদান করিয়া যান। যেহেতু এই সমস্ত কে আদান করিয়া যান অতএব তাহারা আদিত্য। দ্বাদশ আদিত্য হচ্ছে -
কৌমার্যাদিত্য, অনূঢ়াদিত্য, বান্ধবাদিত্য, রূপাদিত্য, রূপমাদিত্য, প্রতাপাদিত্য, নারায়ণাদিত্য, উদিতাদিত্য, ব্রহ্মাদিত্য, নব্যাদিত্য, নিগূঢ়াদিত্য আর প্রাণাদিত্য ।
.
★ ইন্দ্রঃ স্তনযিত্নুরেবেন্দ্রো ; (বৃহঃ উপঃ ৬।১।৬)
অর্থাৎ বিদ্যুৎ হচ্ছে ইন্দ্র । কারন ইহা ঐশ্বর্যের সাধন গতি শক্তি,
প্রকাশ, সমৃদ্ধি এবং সুখের সাধন প্রাপ্ত হয়।
.
★ প্রজাপতিঃ
যজ্ঞঃ প্রজাপতিরিতি ; (বৃহঃ উপঃ ৬।১।৬)
যজ্ঞ হচ্ছে প্রজাপতি। কারন ইহার দ্বারা বর্ষা হয়, প্রাণীদের সুখ মিলে।